পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২

কোয়েল পালন

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

কোয়েল পোল্ট্রির ক্ষুদ্রতম সদস্য। পৃথিবীতে বহু প্রজাতির কোয়েল রয়েছে। তবে গৃহপালিত কোয়েল হিসেবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে শুধু জাপানি এবং বব হোয়াইট প্রজাতির কোয়েলই পালন করা হয়। জাপানি কোয়েল ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হলেও বব হোয়াইট কোয়েল মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। বিজ্ঞানীদের মতে সর্বপ্রথম জাপান, চীন বা কোরিয়াতে জাপানি কোয়েলকে পোষ মানানো হয়। অন্যদিকে গৃহপালিত বব হোয়াইট কোয়েলের উৎপত্তি আমেরিকায়। বর্তমানে বিশ্বে বব হোয়াইট কোয়েল অপেক্ষা জাপানি কোয়েল পালনই বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এ পাঠে তাই জাপানি কোয়েল নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে।

এ অধ্যায় শেষে আমরা-

  • কোয়েল পালনের সুবিধা বলতে পারব 
  • বিভিন্ন জাতের কোয়েলের নাম ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারব 
  • কোয়েলের প্রজনন ব্যবস্থা বর্ণনা করতে পারব 
  • কোয়েলের বাসস্থান বর্ণনা করতে পারব
  • খাচায় কোয়েল পালন ব্যাখ্যা করতে পারব 
  • কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা ব্যাখ্যা করতে পারব 
  • কোয়েলের খাদ্য ও পানি সরবরাহ বর্ণনা করতে পারব 
  • কোয়েলের সুষম রেশন তৈরি করতে পারব 
  • কোয়েলের বিভিন্ন রোগব্যাধি ব্যাখ্যা করতে পারব

কোয়েলের বৈজ্ঞানিক নাম (Coturnix Coturnix Japonica) কটুরনিক্স কটুরনিক্স জাপানিকা। পৃথিবীতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে পরিচালিত পোল্ট্রি শিল্প থেকে যে পরিমাণ মাংস ও ডিম উৎপাদিত হয় তার সিংহভাগ আসে মুরগি, হাঁস ও টার্কি থেকে। কিন্তু বর্তমানে আরও যেসব পোল্ট্রি মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়, তাদের মধ্যে জাপানি কোয়েল অন্যতম। জাপানি কোয়েল এদেশের পোল্ট্রি শিল্পের নবীন সদস্য। এদেশের কয়েকজন উৎসাহী পোল্ট্রি খামারী ‘৯০ দশকের শেষের দিকে সর্বপ্রথম জাপানি কোয়েল আমদানি করেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এদেশের আবহাওয়া বাণিজ্যিকভিত্তিতে কোয়েল পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহর ও থানা পর্যায়ে বেশকিছু কোয়েল খামার বা কোয়েলারি গড়ে উঠেছে। ইতোমধ্যেই এটি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং এদেশের পোল্ট্রি শিল্পে নিজের আসন মজবুত করেছে।

কোয়েল বাংলাদেশে নতুন আবির্ভূত হলেও এশিয়ার অনেক দেশ, যেমন- জাপান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্থান, সৌদিআরবসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোয়েল পালন করা হয়। কোয়েল পৃথিবীর অনেক দেশেই অন্যতম সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে পরিচিত এবং এর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে আমেরিকা, চীন, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে ।

 

 

Content added By

কোয়েল পালনের সুবিধা

কোয়েল পালনের সুবিধা:

১. কোয়েল দ্রুত বর্ধনশীল । 

২. অল্প বয়সে যৌন পরিপক্বতা লাভ করে। মাত্র ৬-৭ সপ্তাহে ডিম পাড়া শুরু করে।

৩. সঠিক যত্ন এবং ব্যবস্থাপনায় বছরে ২৫০-২৬০ টি ডিম পাড়ে।

৪. ডিমে কোলেস্টেরল কম। 

৫. ডিমে প্রোটিনের ভাগ বেশি । 

৬. অন্যান্য পোল্ট্রির দৈহিক ওজনের তুলনায় কোয়েলের ডিমের শতকরা ওজন বেশি। 

৭. ৮-১০টা কোয়েল একটি মুরগির জায়গায় পালন করা যায়। 

৮. মাত্র ১৭-১৮ দিনে কোয়েলের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। 

৯. রোগ খুবই কম হয় ।

১০.বাংলাদেশের আবহাওয়া কোয়েল পালনের উপযোগী। 

১১. খাবার খুবই কম লাগে । 

১২. অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে অল্প দিনে বেশি লাভ করা যায় ।

 

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

  • কোয়েল পালনের জনপ্রিয় দেশ সমূহের নাম লেখ। 
  • জাপানিজ কোয়েলটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে কী নামে পরিচিত ?

 

 

Content added By

কোয়েলের জাত

পৃথিবীতে বর্তমানে ১৭ থেকে ১৮ জাতের কোয়েল আছে। অন্যান্য পোল্ট্রির মতো এর মাংস এবং ডিম উৎপাদনের জন্য পৃথক পৃথক জাত আছে। পৃথিবীতে কোয়েলের বিভিন্ন জাতের মধ্যে জাপানিজ কোয়েল অন্যতম। উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন জাতের কোয়েলের প্রকৃত উৎস জাপানিজ কোয়েল ৷

জাপানিজ কোয়েলটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন: কমন কোয়েল, স্টাবল কোয়েল, ফারোয়া কোয়েল, ইষ্টার্ন কোয়েল, এশিয়াটিক কোয়েল, জাপানি কিং কোয়েল, লাল গলা বিশিষ্ট কোয়েল ইত্যাদি। উত্তর আমেরিকায় বব হোয়াইট কোয়েল এবং ক্যালিফোর্নিয়া কোয়েল নামের বিভিন্ন জাতের কোয়েল পাওয়া যায় ।

বিভিন্ন জাতের কোয়েলের বৈশিষ্ট্য :

কোয়েলের জাত/উপজাত 

বাণিজ্যিক জাপানি কোয়েলের অনেকগুলো জাত ও উপাজাত রয়েছে। জাত ও উপাজাতভেদে এদের গায়ের রঙ, ওজন, আকার, আকৃতি, ডিম পাড়ার হার ডিমের ওজন, বেঁচে থাকার হার ইত্যাদিতে বেশ পার্থক্য হয়ে থাকে। প্রতিটি জাত ও উপজাত থেকে উন্নত বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রজনন ঘটিয়ে বিভিন্ন স্ট্রেইন ও লাইন সৃষ্টি করা হয়েছে। স্ট্রেইনভেদে কোয়েলের ডিম পাড়া, ডিমের ওজন, মাংস উৎপাদন ক্ষমতা প্রভৃতিতে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।

লেয়ার কোয়েল 

জাপানি কোয়েল ছোটখাট ও গাট্টাগোট্টা পাখি। এদের ঠোঁট, ঘাড় ও পা খাটো, লেজ ছোট। পালকের তুলনায় দেহ (মাংস, হাড় ও নাড়িভুঁড়ি) বেশি ভারি। ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত একেকটি কোয়েল গড়ে ১৭.৫ সে.মি. লম্বা হয়। তবে আমাদের দেশে আনা পুরষ ও স্ত্রী কোয়েলগুলোর ওজন যথাক্রমে ১২০-১৩০ গ্রাম ও ১৪০-১৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। কোয়েলের ডিমগুলো অত্যন্ত সুন্দর। ডিমের খোসার রঙ গাঢ় হলদে থেকে হালকা বাদামি। খোসার এ রঙের উপর থাকে অসংখ্য ছোট বড় নীল, বেগুনি, খয়েরি বা চকোলেট রঙের কারুকাজ বা দাগ। একেক কোয়েলের ডিমের কারুকাজ বা কারুকাজের রঙ একেক রকম হয়। কোনো কোনো লাইনের কোয়েল বছরে ২৯০-৩০০ টি ডিম পাড়ে।

বর্তমানে পৃথিবীতে পাঁচটি উপজাতের লেয়ার কোয়েল বেশি জনপ্রিয়। যেমন- 

১. ফারাও 

২. ব্রিটিশ রেঞ্জ 

৩. ইংলিশ হোয়াইট 

৪. ম্যানচুরিয়ান গোল্ডেন ও 

৫. টুক্সেডো

পাঁচ উপজাতের কোয়েলের মধ্যে প্রজনন ঘটিয়ে নানা বর্ণের কোয়েল তৈরি করা যায়। এ উপজাতগুলোর মধ্যে ফারাও উৎকৃষ্টতম। তাই বিশ্বব্যাপী এর কদরই বেশি। ফারাও উপজাত থেকে ব্রাউন কোয়েল নামে একটি স্ট্রেইন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে ডিমের জন্য ফারাও এবং ব্রাউন দুই প্রকারের কোয়েলই পালন করা হয়।

 

ফারাও কোয়েলের বৈশিষ্ট্য :

  • ফারাও কোয়েলের পালকের রঙ হুবহু বুনো জাপানি কোয়েলের মতো। 
  • এদের পালকের রঙ বাদামি।
  • সারা গায়ে গাঢ় চকোলেট বা কালো রঙের ছোপ থাকে।
  • প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষ কোয়েলগুলোর বুকের উপরের অংশ হলদে বাদামি এবং নিচের অংশ হালকা বাদামি, 
  • মুখমন্ডলের রঙটা খয়েরি । 
  • স্ত্রী কোয়েলগুলোর মুখমন্ডল, ঘাড় ও বুকের উপরের অংশ বাদামি ।
  • বুকের উপরের অংশের এ বাদামি রঙের উপর কালো বা খয়েরি গোলাকার ফোঁটা থাকে। 
  • এদের বুকের নিচের অংশটা তামাটে। 
  • সদ্যফোটা ৬-৭ গ্রাম ওজনের বাচ্চাগুলোর গায়ের কোমল পালকের রঙ হলদে। এর উপর খয়েরি বা কালো রঙের ছোপ থাকে ।
  • এরা ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। 
  • আট সপ্তাহে ডিম উৎপাদন ৫০% এ পৌঁছে। দশ সপ্তাহে তা বেড়ে গিয়ে ৮০% হয় এবং ১৫ সপ্তাহের মধ্যে ডিম উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে (৯০%) পৌঁছায়। এরা ৭৫% ডিম বিকেল ৩-৬ টার মধ্যে এবং বাকি ডিম এ সময়ের পরে পেড়ে থাকে ।

ব্রাউন কোয়েলের বৈশিষ্ট্য 

ব্রাউন কোয়েলের পালকের রঙের ধরন ফারাও কোয়েলের মতোই কিছু ফারাও উপজাতের থেকেও তুলনামূলকভাবে বেশি খয়েরি হয়। বাচ্চাগুলোর কোমল পালকের রঙ হলদে। তবে এ ফলদের উপরের ছোপগুলো তুলনামূলকভাবে হালকা। এরা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির, ফারাও কোয়েলের মতো মারামারি বা ঠোকরাকরি করে না। এছাড়া বাকি সব বৈশিষ্ট্য প্রায় ফারাও কোয়েলের মতোই।

ব্রয়লার কোয়েলের বৈশিষ্ট্য 

বৰ হোয়াইট :

  • এই জাতের কোয়েলের উৎপত্তিস্থল আমেরিকায় । 
  • এই জাতীয় কোয়েলকে মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়।
  • ৬-১৬ সপ্তাহ বয়সে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা যায়।

কুটর্নিক্স কুটর্নিক্স জাপনিকা

এই জাতের কোয়েলের উৎপত্তিস্থল জাপানে। এই জাত থেকে মাংস ও ডিম উৎপাদনের জন্য দুইটি লাইন তৈরি করা হয়েছে। মাংসের জন্য তৈরিকৃত লাইন ৬ সপ্তাহ বয়সে বয়ঃপ্রাপ্ত হয় ও বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা যায়। এই জাতীয় তিনটি কোয়েলের নাম হল-

ক) কারী উত্তম 

খ) কারী উচ্চাওয়াল 

গ) কারী সুউয়েটা

উপরোক্ত কোয়েলের উৎপাদন বৈশিষ্ট্যসমূহ-

  • এ জাতীয় কোয়েলের দেহের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। 
  • তাদের খাদ্য রূপাক্ষরের দক্ষতা বেশি হয়।
  • এদের ৫-৬ সপ্তাহ বয়সে বাজারজাত করা যায়। 
  • ৬ সপ্তাহ বয়সে এই জাতীয় কোয়েলের দৈহিক ওজন ১৫৫ গ্রাম থেকে ১৯০ গ্রাম হয়ে থাকে।
  • দৈনিক খাবারের প্রয়োজন হয় ২৫-২৮ গ্রাম।

 

 

Content added || updated By

কোয়েলের প্রজনন ব্যবস্থা

কোয়েলের প্রজনন ব্যবস্থা

কোয়েলের ডিম ৮-১০ সপ্তাহ বয়সে সকল ঋতুতেই পুনরুৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যায়। শুধু মাত্র ডিম ফুটাতে চাইলে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখার প্রয়োজন। ডিমের জন্য স্ত্রী কোয়েল পালন অধিক লাভজনক। আশানুরূপ ডিমের উর্বরতা পেতে হলে ২:১, ৫:২ বা ৩:১ অনুপাতে স্ত্রী এবং পুরুষ কোয়েল একত্রে রাখতে হবে। অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে ৩:১ অনুপাত অপেক্ষাকৃত ভালো। স্ত্রী কোয়েলের সাথে পুরুষ কোয়েল রাখার ৪ দিন পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করা উচিত। স্ত্রী কোয়েল থেকে পুরুষ কোয়েল আলাদা করার পর তৃতীয় দিন পর্যন্ত ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করা যায় ৷

স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কোয়েল ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে। ৮-১০ সপ্তাহ বয়সে ৫০% ডিম পাড়ে এবং ১২ সপ্তাহের পর থেকে ৮০% ডিম পাড়ে। উপযুক্ত পরিবেশে প্রথম বছর গড়ে ২৫০-৩০০ টি ডিম পাড়ে। কোয়েল ডিমের উর্বরতা স্বাভাবিক অবস্থায় শতকরা ৮২-৮৭ ভাগ। ডিমপাড়া শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহের ডিম ফোটাতে বসানো উচিত নয়। ৫০ সপ্তাহের অধিক বয়সের কোয়েলের ডিমের উর্বরতা এবং ফোটার হার কম। ডিমের ওজন স্ত্রী কোয়েলের দৈহিক ওজনের ৮%। কোয়েল এক বাণিজ্যিক বছরের অধিককাল পালন করা উচিত নয়। আন্তঃপ্রজনন যাতে না হয় সে জন্য নিকট সম্পর্কযুক্ত কোয়েলের মধ্যে মিলন ঘটানো যাবে না ।

 

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

  • অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে স্ত্রী কোয়েলের সাথে পুরুষ কোয়েল রাখার অনুপাত কত? 
  • স্ত্রী কোয়েলের সাথে পুরুষ কোয়েল রাখার কত দিন পর থেকে বাচ্চা ফোটানোর ডিম সংগ্রহ করা উচিত ব্যাখ্যা কর ।

 

 

Content added || updated By

কোয়েলের বাসস্থান

কোয়েলের বাসস্থান

বাণিজ্যিকভাবে কোয়েল পালনের জন্য লিটার পদ্ধতির চেয়ে কেইজ পদ্ধতি অধিক লাভজনক । ছোট জোড়া খাঁচা বা কেইজ কোয়েল পালনের জন্য অধিকতর উপযোগী। মেঝে এবং খাঁচায় দুই পদ্ধতিতে কোয়েল পালন সু-প্রতিষ্ঠিত। বাচ্চা অবস্থায় প্রতিটি কোয়েলের জন্য ৭৫ বর্গ সে.মি. এবং ১০০ বর্গ সে.মি. জায়গা যথাক্রমে খাঁচায় ও মেঝেতে দরকার। অন্যদিকে বয়স্ক কোয়েলের বেলায় খাঁচায় প্রতিটির জন্য ১৫০ বর্গ সে.মি. এবং মেঝেতে ২৫০ বর্গ সে.মি. জায়গা প্রয়োজন। দুইটি ডিমপাড়া কোয়েলের জন্য একটি ১২.৭০ সেমি: × ২০.৩ সেমি: (৫ × ৮ ইঞ্চি) মাপের কেইজই যথেষ্ট। কোয়েলের ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাপমাত্রা ৫০-৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট হওয়া ভালো। স্ত্রী কোয়েল এবং পুরুষ কোয়েল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পৃথক পৃথকভাবে রাখতে হবে।

 

 

Content added || updated By

খাঁচায় কোয়েল পালন

খাঁচায় কোয়েল পালন

খাঁচায় ৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১২০ সে.মি. দৈর্ঘ্য, ৬০ সে. মি. প্রস্থ এবং ৩০ সে. মি. উচ্চতাবিশিষ্ট একটি খাঁচা প্রয়োজন । খাঁচার মেঝের জালিটি হবে ১৬-১৮ গেজি, ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চার খাঁচা মেঝের জালের ফাঁক হবে ৩ মিলি মিটার এবং বয়স্ক কোয়েলের খাঁচায় মেঝের জালের ফাঁক হবে ৫ মি. মি. × ৫ মি. মি. । খাঁচার দুই পার্শ্বে একদিকে খাবার পাত্র অন্যদিকে পানির পাত্র সংযুক্ত করে দিতে হবে। খাঁচায় ৫০টি কোয়েলের জন্য তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি উচ্চতা বিশিষ্ট ২৮ ব. সে. মি. বা ৩ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন ।

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

১৫০টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য খাঁচার মাপ কত ? 

১০০০টি কোরেলের জন্য সপ্তাহ বর পর্যন্ত বাঁচার কত বর্গফুট জারগার প্রয়োজন?

 

 

Content added By

কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা

কোয়েলের বাচ্চার ব্রুডিং ব্যবস্থাপনা

সদ্য ফুটন্ত কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট হয়। এক দিন বয়সের কোয়েলের বাচ্চার ওজন মাত্র ৫-৭ গ্রাম, ভাই ঠান্ডা বা গরম কোনোটাই তারা সহ্য করতে পারে না। এমতাবস্থার খাদ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান এবং কাম্য তাপমাত্রা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বজায় রাখতে হয়। এ সময় কোনো রকম ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা বা কোনো রকম পীড়ন হলে এর প্রভাব স্বাভাবিক দৈহিক বৃদ্ধি, ডিম উৎপাদন এবং বেঁচে থাকার উপর পড়ে। বাচ্চাকে ভাগ দেয়া বা ব্রডিং খাঁচায় বা কেজে করা যায়। উত্তর পদ্ধতিতেই তাপ দেয়া যায় এবং তাপমাত্রার প্রয়োজনীয়তা একই রকম। প্রথম সপ্তাহে সাধারণত ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা দিয়ে ব্রুডিং আকা করা হয় এবং তাপমাত্রা প্রতি সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে ৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে নিম্নলিখিত মাত্রায় আনতে হবে।

           বাচ্চার বয়স অনুযায়ী কোয়েলের ব্রুডিং তাপমাত্রা

থার্মোমিটারের সাহায্যে তাপমাত্রা নিরূপণ করা যায়। থার্মোমিটার ছাড়া ব্রুডারের তাপ সঠিক রয়েছে কিনা তা ব্রুডারের বাচ্চার অবস্থান দেখে এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বুঝা যায়। বাচ্চাগুলো যদি বাল্বের কাছে জড়োসড়ো অবস্থায় থাকে তবে বুঝতে হবে তাপমাত্রা কম হয়েছে। আর যদি বাচ্চা বাল্ব থেকে দূরে থাকে তবে তাপমাত্রা অধিক বুঝতে হবে। বাচ্চাগুলো যদি চারদিকে সমভাবে ছড়িয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক ঘুরাফেরাসহ খাদ্য ও পানি গ্রহণ করে তাহলে বুঝতে হবে পরিমিত তাপমাত্রা আছে ।

বাংলাদেশে গরমের সময় দুই সপ্তাহ এবং শীতের সময় তিন থেকে চার সপ্তাহ কৃত্রিম উপায়ে তাপ দিতে হয়। গবেষণা থেকে জানা যায় যে, দুই সপ্তাহে কেজে ব্রুডিং করে পরবর্তীতে মেঝেতে পালন করলে বাচ্চার মৃত্যুহার অনেক কম হয় এবং বাচ্চার ওজন অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। কোয়েলের মৃত্যুহার নির্ভর করে তার উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার ওপর। ব্রুডিংকালীন পর্যাপ্ত তাপ প্রদান করতে না পারলে বাচ্চার মৃত্যুহার বেড়ে যাবে। কাজেই এ সময় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া দরকার ।

 

 

Content added By

কোয়েলের খাদ্য ও পানি সরবরাহ

কোয়েলের খাদ্য ও পানি সরবরাহ

খাদ্য পাত্রঃ 

বাচ্চা অবস্থায় ফ্লাট ট্রে বা ছোট খাবার পাত্র দিতে হবে যেন খাবার খেতে কোনোরকম অসুবিধা না হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতি ২৮টি বাচ্চার জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫০ সে.মি., প্রস্থ ৮ সে.মি. এবং উচ্চতা ৩ সে.মি.) এবং প্রতি ৩৪ টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য একটি খাবার পাত্র (যার দৈর্ঘ্য ৫৭ সে.মি., প্রস্থ ১০ সে. মি. এবং উচ্চতা ৪ সে.মি) ব্যবহার করা যায়। দিনে দুইবার বিশেষ করে সকালে এবং বিকেলে খাবার পাত্র ভালো করে পরিষ্কার সাপেক্ষে মাথাপিছু দৈনিক ২০-২৫ গ্রাম খাবার দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, প্রথম সপ্তাহ থেকে ৫ গ্রাম দিয়ে শুরু করে প্রতি সপ্তাহে ৫ গ্রাম করে বাড়িয়ে ২০-২৫ গ্রাম পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রতিটি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১.২৫ থেকে ২.৫ সে.মি. (১/২ থেকে ১ ইঞ্চি) খাবার পাত্রের জায়গা দিতে হবে ।

পানির পাত্র: 

সর্বদাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পানি সরবরাহ করতে হবে। প্রতিটি কক্ষে কোয়েলের জন্য ০.৬ সে. মি. (১/৪ ইঞ্চি) পানির পাত্রের জারণা দিতে হবে। অটোমেটিক বা স্বাভাবিক যে কোনো রকম পানির পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতি ৫০ টি কোয়েলের জন্য একটি পানির পাত্র দেয়া উচিত। নিপল জিংকার বা কাপ ক্রিংকারও ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি ৫ টি বয়স্ক কোয়েলের জন্য ১টি পিল বা কাপ ক্রিংকার ব্যবহার করা যেতে পারে।

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

৫০ টি কোয়েলের জন্য কত মাপের পানির পাত্রের প্রয়োজন হবে?

৫০ টি কোয়েলের জন্য কতটি নিপল ড্রিংকার প্রয়োজন হবে?

 

 

Content added By

কোয়েলের সুষম রেশন তৈরি

কোয়েলের সুষম রেশন তৈরি

কোরেলের স্ট্যান্ডার্ড রেশম বাজারে সহজলভ্য নর। ফোরেলের রেশমকে ২ ভাগ ভাগ করা যায়।

জন্মদিন থেকে তিন সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত এক ধরনের খাবার দিতে হবে। যাতে ২৫-২০% ক্রুড প্রোটিন এবং ২৮০০-২৯০০ কিলোক্যালরি/কেজি বিপাকীয় শক্তি থাকতে হবে।

০-৩ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত প্রতি ১০০ কেজি খাদ্যে ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্সি ১৫০ গ্রাম এবং ৪ সপ্তাহ বয়স থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ১০০ গ্রাম ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স উত্তমরূপে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।

 

                      বয়স অনুযায়ী কোয়েলের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ

 

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

১০০ কেজি কোয়েলের স্টার্টার রেশন তৈরি কর যার ২৫-২৬% ক্রুড প্রোটিন এবং ২৮০০-২৯০০ কিলোক্যালরি/কেজি বিপাকীয় শক্তি থাকে ।

 

 

Content added By

কোয়েলের বিভিন্ন রোগব্যাধি

কোয়েলের বিভিন্ন রোগব্যাধি

কোয়েলের রোগ নেই বললেই চলে। তবে সংক্রামক ব্রংকাইটিস ককসিডিওসিস এবং সালমোনেলোসিস রোগ হতে পারে। বাচ্চা ফোটার ১ম দুই সপ্তাহ বয়স বেশ সংকটপূর্ণ। এ সময় অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কোয়েলের বাচ্চার যত্ন নিতে হয়। অব্যবস্থাপনার কারণে কোয়েলের বাচ্চা মারা যায় তবে বয়স্ক কোয়েলের মৃত্যুহার খুবই কম।

কোয়েলের বিভিন্ন রোগের কারণ, বিস্তার, লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিকার আলোচনা করা হল :

কোয়েলের সংক্রামক ব্রংকাইটিস রোগ 

এটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে মোরগ-মুরগি ও কোয়েলের এ রোগ হয়ে থাকে ৷ বাচ্চা কোয়েলে এ রোগটি বেশি হয় এবং তীব্রভাবে হতে পারে ।

রোগ বিস্তার: 

আক্রান্ত পাখির শ্লেষা এবং মলের সাহায্যে রোগজীবাণু বিস্তার লাভ করে।

রোগ লক্ষণ: 

১. রোগ জীবাণু শ্বাসনালীর অভ্যন্তরে আক্রমণ করে বিধায় শ্বাসনালী শোঁ শোঁ শব্দ এবং মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। 

২. ডিম দেয়া কোয়েলের ডিম দেয়া কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। 

৩. নাক দিয়ে পানি পড়তে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা 

কোয়েলের সংক্রামক ব্রংকাইটিস রোগের কোন চিকিৎসা নেই। তবে নটিল ১ সি সি ২০ লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

 

কোয়েলের ককসিডিওসিস রোগ 

কোয়েলের ককসিডিওসিস একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বে প্রায় সবদেশেই পাখিতেই এ রোগ হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। সব বয়সেই কোয়েলের এই রোগ হতে পারে। ককসিডিয়া নামক প্রটোজোয়া যারা সৃষ্ট রোগসমূহকে ককসিডিওসিস বলে।

রোগের বিস্তারঃ 

১. খাদ্য ও পানির মাধ্যমে জীবাণুর সিস্ট কোরেলের দেহে প্রবেশ করে। 

২. খামারে কর্মরত কর্মীদের পোশাক, জুতা, হাত, পায়ের মাধ্যমে বাইর থেকে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। 

৩. ইঁদুর, তেলাপোকা, বাইরের হাঁস-মুরগি বা অন্যান্য প্রাণীর সংস্পর্শ থেকেও এ রোগ দেখা দিতে পারে।

 

রোগের লক্ষণ : 

১. রক্তমিশ্রিত পাতলা পায়খানা দেখা দেয়।

২. হঠাৎ করে খাদ্য এবং পানি খাওয়া বন্ধ করে দেয় এবং ঝাঁক থেকে পৃথক হয়ে ঝিমানো শুরু করে। 

৩. ধীরে ধীরে পালক ছেড়ে দেয়, দুর্বল হয়ে পড়ে। 

৪. ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, উৎপাদন কমে যায় ৷

চিকিৎসা: 

সালফার জাতীয় ঔষধের ব্যবহার করে চিকিৎসা করা যেতে পারে। ই.এস.বি ১ গ্রাম ১০ লিটার পানির সাথে বা সুপার কক ১ সিসি ১০ লিটার বিরুদ্ধ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে ৫-৭ দিন দিনে দুবার করে ।

প্রতিকার: 

১. বাচ্চা কোয়েলকে সবসময় বয়স্ক কোয়েল থেকে আলাদা রাখতে হবে। 

২. খাবার পাত্র, পানির পাত্র নিয়মিত পরম পানি বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 

৩. খাবারের আশে পাশে যাতে ইঁদুর, পোকামাকড় বাস না করতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। 

৪. প্রতিকার হিসেবে প্রথম বয়সেই ঔষধের প্রতিষেধক মাত্রা নিয়মিত প্রয়োগ করতে হবে। 

৫. খামারে রোগ দেখা দিলে, অসুস্থ বাচ্চা আলাদা করে ফেলতে হবে। 

৬. খামার পরিচর্যাকারীকে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে খামারে প্রবেশ করতে হবে। 

৭. লিটার শুকনা রাখতে হবে।

 

কোয়েলের সালমোনেলোসিস রোগ 

কোরেলের সালমোনেলোসিস রোগের কারণ : সালমোনেলা গোত্রভুক্ত ব্যাকটেরিয়া এ রোগের কারণ।

রোগ বিস্তার: 

আক্রান্ত পাখির ডিমের মাধ্যমে এবং খাবার পানি, খামারে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, কর্তব্যরত শ্রমিক ও আগমনকারি অন্যান্য লোকজন, খাদ্য সরবরাহের গাড়ি, বন্যপ্রাণি ইত্যাদির মাধ্যমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।

লক্ষণ፡ 

১. হলুদ বা সবুজ রঙের আঠালো পাতলা পায়খানা করে। 

২. চোখ বুজে ঝিমাতে ।

৩. পা এবং পারের পিড়া ফুলে যায় ও ব্যথা হয়।

প্রতিকার: 

সালমোনেলা ভ্যাকসিন দেয়া যেতে পারে। আক্রান্ত গুলোকে সুপারমেড টি এস-১, ১ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়ালে বা ক্ষণেকুইন ১০% ১ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

 

কোয়েল খামারে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা 

১. কোয়েলকে কোনো রকম প্রতিষেধক টিকা দেয়ার প্রয়োজন নেই। 

২. মাঝে মাঝে সালমোনেলোসিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়। 

৩. বিভিন্ন বয়সের কোরেল আলাদা রাখতে হবে। 

৪. খামার পরিদর্শক নিয়ন্ত্রিত হবে এবং স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে খামারে প্রবেশের অনুমতি পাবে। 

৫. অন্য কোনো পাখি বা প্রাণির কোয়েল ঘরে প্রবেশ নিষেধ করতে হবে। 

৬. অসুস্থ পাখিকে সুস্থগুলো থেকে আলাদা রাখতে হবে। 

৭. মৃত পাখি পুড়িয়ে অথবা মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। 

৮. কোয়েলের ঘরের ভেতর এবং বাইরে রোগ প্রতিরোধক ঔষধ (সুপারসেন্ট, হোমাইড) দ্বারা স্প্রে করতে হবে।

 

 

 

Content added By

জব ০৫ঃ কোয়েলের বাচ্চা ব্রুডিং

জবের নামঃ কোয়েলের বাচ্চা ব্রডিং

কোয়েলের বাচ্চা ছোট অবস্থায় পালক কম থাকায় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তাই একে কৃত্রিম ভাবে ব্রুডারের সাহায্যে তাপ প্রদান করা হয়, একে ব্রুডিং বলে। এই সময় তাপ প্রদানের পাশাপাশি খাদ্য, পানি, পিটার ও সামান্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়।

পারদর্শিতা নির্ধারক / মানদণ্ড

  • কোরেলর বাচ্চা ব্রুডিং করা 
  • সঠিক ভাবে চিকগার্ড স্থাপন করা 
  • ব্রুডারের মাধ্যমে সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করা 
  • সঠিক জায়গায় খাদ্য পাত্র ও পানি পাত্র স্থাপন করা 
  • ব্রুডিংকালীন সময়ে খাদ্য, পানি, লিটার ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করা

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামালঃ ব্যক্তি সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)

 

                     খ) প্রয়োজনীয় কাঁচামাল

 

                       গ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি:

কাজের ধারাঃ

  • সহজে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে এমন একটি ঘর নির্বাচন কর। 
  • ঘরটি ভালভাবে পরিষ্কার কর। 
  • জীবাণুনাশক দিয়ে ঘরটি ভালভাবে জীবাণুমুক্ত কর । 
  • ঘরটি শুকানোর পর মেঝেতে গু লিটার ৩-৪ ইঞ্চি পুরু বিছিয়ে দাও । 
  • ঘরটির সুবিধাজনক স্থানে প্রয়োজনানুসারে এক বা একাধিক ব্রুডার স্থাপন কর। ৩০০-৪০০টি বাচ্চা জন্য ১টি ৫ ফুট ব্যাস বিশিষ্ট ব্রুডার নাও ।
  • ব্যাটারি খাচার ক্ষেত্রে ১০০ বর্গ সেমি / বাচ্চা হিসাবে জায়গা রাখ। 
  • বাচ্চার সংখ্যানুসারে ব্রুডারের চতুর্দিকে প্রয়োজনীয় দূরত্বে চিকগার্ড স্থাপন কর । 
  • চিকগার্ডের ভিতরে লিটারের উপর পেপার বিছিয়ে দাও। 
  • পেপারের উপর প্রয়োজনানুযায়ী খাবার ট্রে ও পানি ট্রে স্থাপন কর।
  • থার্মোমিটার ও হাইগ্রোমিটার বাচ্চার পলার সমান উচ্চতার ঝুলিয়ে দাও । 
  • বাচ্চা ছাড়ার ১২ ঘন্টা পূর্বে ব্রুডার চালু করে থার্মোমিটার ও হাইগ্রোমিটারের সাহায্যে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা পরিমাপ কর এবং খেয়াল রাখ তা কাঙ্খিত মাত্রায় আছে কি না ।
  • প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা উঠলে চিকগার্ডের ভিতরে একদিনের বাচ্চা ছাড়।

ব্রুডিং পিরিয়ডে বিভিন্ন বয়সে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিম্নরূপ:

  • ব্রুডিং কালে বাচ্চাকে তালিকা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ষ্টার্টার রেশন ও বিশুদ্ধ পানি পরিবেশন কর। 
  • নির্ধারিত তালিকা মোতাবেক ঔষধপত্র ও টিকা প্রদান কর। 
  • ছয় সপ্তাহ পর ব্রুডার এবং চিক পার্থ সরিরে ফেল । 
  • সকল তথ্য রেকর্ড শীট ও রেজিষ্টারে লিপিব ।

সতর্কতাঃ

 ১) কোয়েলের বাচ্চা খুবই ছোট ও নরম তাই সাবধানে নাড়াচাড়া করা প্রয়োজন । 

২) ব্যাটারী পাচার দরজা সাবধানে খুলতে হবে যাতে বাচ্চা পালাতে না পারে । 

৩) ব্যাটারী পাচার তাপমাত্রা, পানি সরবরাহ, সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।

 

 

Content added By

জব ০৬ঃ কোয়েলের সুষম খাদ্য তৈরিকরণ

জবের নাম : কোয়েলের সুষম খাদ্য তৈরিকরণ

     কোয়েল পালনের বিভিন্ন পর্যায়ে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য রক্ষা এবং ডিম ও মাংস উৎপাদনের জন্য সুখম খান সেরা প্ররোজন। কোরেল কে সাধারণত চার ধরনের খাদ্য প্রদান করা হয় যথা স্টার্টার, গ্রোয়ার, লেয়ার ও ব্রিডার রেশন। ভিন্ন উপাদান ঠিক ा মিশিয়ে প্রয়োজনীয় মাত্রা অনুসারে সুষম রেশন তৈরী করা হয়।

পারদর্শিতা নির্ণায়ক / মানদণ্ড

  • কোয়েলের বয়স অনুসারে কোন ধরণের খাদ্য প্রদান করা 
  • বয়স অনুসারে সুষম রেশন তৈরি করা 
  • খাদ্য উপাদান সঠিক মাত্রায় মিশিয়ে প্রয়োজনীয় মাত্রা অনুসারে সুষম রেশন তৈরী করা 
  • স্টার্টার, গ্রোয়ার, লেয়ার ও ব্রিডার রেশনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নিশ্চিত করা

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল :

                           ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (PPE)

 

                       খ) প্রয়োজনীয় কাঁচামাল

 

                                গ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি:

কাজের ধারা:  

১) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সংগ্রহ কর । 

২) কোয়েলের প্রয়োজনীয় খাদ্য তালিকা সংগ্রহ কর। 

৩) তালিকা মোতাবেক খাদ্য উপকরণগুলো মেপে পৃথক কর। 

৪) পর্যায়ক্রমে কম পরিমান ব্যবহৃত খাদ্য উপাদান ও পরবর্তীতে বেশী পরিমানে ব্যবহৃত উপকরণগুলো মিশাও । 

৫) মিশ্রিত খাদ্য বস্তায় বা পাত্রে রেখে পরবর্তীতে খাওয়ানোর জন্য সংরক্ষণ কর।

 

নিম্নে কোয়েলের খাদ্য তালিকা প্রদান করা হল:-

 

সতর্কতাঃ 

১) কোয়েলের খাদ্য উপাদানগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে। 

২) খাদ্য উপকরণগুলো ভালভাবে মিশাতে হবে যেন সর্বত্র মিশ্রিত হয় । 

৩) আমিষের ভাগ সঠিক আছে কি না হিসাব করে দেখতে হবে।

 

 

 

Content added By

                          অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন

১. জাপানি কোয়েলের বৈজ্ঞানিক নাম লেখ । 

২. পৃথিবীতে কত জাতের কোয়েল পালন করা হয় ? 

৩. লেয়ার কোয়েলের জাতগুলির নাম লেখ । 

৪. লেয়ার কোয়েলের গড় ওজন কত? 

৫. কোয়েল কত সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে ? 

৬. কোয়েল বছরে কত টি ডিম দেয়?

 

 

                    সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন

১. কোয়েলের বাসস্থান নির্মাণ কৌশল লেখ । 

২. ব্রয়লার কোয়েলের বৈশিষ্ট্য লেখ। 

৩. কোয়েল পালনের সুবিধাসমূহ লেখ। 

৪. বব হোয়াইট কোয়েলের বৈশিষ্ট্য লেখ ৷ 

৫. কুটনিক্স কুটনিক্স জাপানিকা কোয়েলের বৈশিষ্ট্য লেখ ৷

 

 

                    রচনামূলক উত্তর প্রশ্ন

১. কোয়েলের প্রজনন প্রক্রিয়া বর্ণনা কর। 

২. কোয়েলের ব্রুডিং পদ্ধতি বর্ণনা কর। কলোক্যালরি/কেজি)। 

৩. কোয়েলের ০-৩ সপ্তাহের খাদ্য তৈরি কর (আমিষ ২৫-২৬% ও শক্তি ২৮০০-২৯০০ 

৪. কোয়েলের ফিনিশার খাদ্য তৈরি কর (আমিষ ২৩-২৪% ও শক্তি ২৮৫০-২৯৫০ কিলোক্যালরি/কেজি)।

 

 

 

Content added By
Promotion